মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

জামালপুর জেলার ইতিহাস,ঐতিহ্য ও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

জামালপুর জেলার ইতিহাস সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা পেতে হলে প্রখ্যাত আউলিয়া হযরত শাহ জামাল (র:) ও হযরত শাহ কামাল (র:) এ দুই বুজুর্গ ব্যক্তির নাম স্মরণ করতে হয়। ইসলাম তথা মানবতার বাণী প্রচারের জন্য হযরত শাহ জামাল (র:) দিল্লীর বাদশাহ আকবরের সময়কালে সুদূর ইয়েমেন দেশ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য জামালপুরে তশরিফ রাখেন। জামালপুর শহরের আদি নাম সিংহজানী। হযরত শাহ জামালের (র:) নামে কোন মৌজা, গ্রাম হাট-বাজার কিছুই নেই।  আমাদের পরম সৌভাগ্য যে এ পূণ্যবান ব্যক্তির মাজার শরীফ জামালপুর শহরে অবস্থিত। তাঁর পবিত্র নামেই এ জেলার নামকরণ করা হয়েছে।

হযরত শাহ জামাল (রাঃ) এর মাজার শরীফ

জামালপুর ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে প্রথম মহুকুমা হিসেবে ১৮৪৫ সালে মর্যাদা লাভ করে। মহুকুমা সৃষ্টি হওয়ার ১৩৩ বছর পরে ১৯৭৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর জেলার মর্যাদা পায়। জামালপুর জেলা গঠনের আন্দোলন মূলত: বঙ্গভঙ্গের পরে ১৯১২ সালেই সূচীত হয়। ১৯১২ সালে লর্ড কার্জন জামালপুরকে জেলা করার ঘোষণা দেন। ১৯১৯ সালের দিকে ধনবাড়ীর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ধনবাড়ীকে জেলা সদর করে জামালপুর ও টাঙ্গাইলকে নিয়ে একটি জেলা করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু এতে জামালপুর ও টাঙ্গাইলবাসী কোন পক্ষই সমর্থন করেনি। ১৯০৮ সালে শেরে-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক জামালপুর এর মহুকুমা প্রশাসক থাকার সময় জামালপুরকে জেলা করার দাবী আরো বেগবান হয়ে উঠে। জামালপুরকে জেলা হেডকোয়ার্টার করার জন্য ১৯১৭ সালে জামালপুর পৌর এলাকায়  ২৩৫ একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করে। ১৯২০ সালে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার কয়েকটি গ্রাম সরিষাবাড়ী থানার সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৩৮ সালে তৎকালীন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের উদ্যোগে জামালপুরকে জেলা করার দাবী সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। জামালপুর না টাঙ্গাইল কোথায় জেলা সদর হবে এ নিয়ে তৎকালীন বৃটিশ সরকারও কোন সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। এ সময়ে বন্যা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইতাদি কারণে জামালপুর জেলার বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ে। ঐ সময়ে কংগ্রেস ও মুসলিমলীগের বহু প্রভাবশালী নেতা থাকলেও নিজেদের কোন্দলের কারণে তারা জামালপুর জেলার বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারেননি, যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরতে পারেননি জামালপুর জেলা গঠনের প্রয়োজনীয়তা। যে কারণে জামালপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হতে প্রায় ১৩৩ বছর সময় লেগেছে।


১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর জামালপুর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার  পরেই জামালপুরকে জেলা করার দাবী আবারো বেগবান হয়ে উঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৫ সালে জামালপুরকে জেলা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৭৮ সালে ২৬ ডিসেম্বর জামালপুর বাসীর জন্য একটি আনন্দের দিন। কারণ এ দিনে জামালপুরকে স্বাধীন বাংলাদেশের ২০তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।


জামালপুর জেলা সৃষ্টির প্রতিষ্ঠা লগ্নে যে সকল সরকারী কর্মকর্তা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব কেরামত আলী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জনাব খানে আলম খান, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক জনাব বদিউর রহমান, জামালপুর মহুকুমা প্রশাসক জনাব আব্দুর রশিদ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।




জামালপুর বাংলাদেশের ২০তম জেলা। এ জেলার ভৌগলিক অবস্থান খুবই মনোমুগ্ধকর। বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে গারো পাহাড়ের পাদদেশে নৈসর্গিক দৃশ্য ও নয়নাভিরাম  প্রাকৃতিক লীলাভূমি যমুনা, ব্রক্ষ্মপুত্র,ঝিনজিরাম, ঝিনাই ও বানার নদীর পলি বিধৌত অববাহিকায় প্রখ্যাত সাধক আউলিয়া হযরত শাহ্ জামাল (রহ:) ও হযরত শাহ্ কামাল (রহ:) এর পূণ্য স্মৃতিধন্য ভূমিতে জামালপুর জেলার  অবস্থান।




সীমানা:



বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর মধ্যে জামালপুরের অবস্থান :  উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য(গারো পাহাড়), শেরপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা; পূর্বে শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলা; দক্ষিণে টাঙ্গাইল জেলা  এবং পশ্চিমে যমুনা নদীর তীরবতী সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলা । জামালপুর জেলার এবং ৭ টি উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান নিম্নে উল্লেখ করা হল:

নাম

উত্তর অক্ষাংশ
দ্রার্ঘিমাংশ
জামালপুর
২৪ডি: ৩৪মি:
৮৯ডি: ৩৮মি:
জামালপুর সদর
২৪ডি: ৪২মি:
৮৯ডি: ৫২মি:
সরিষাবাড়ী
২৪ডি: ৩৪মি:
৮৯ডি: ৪৩ম
ইসলামপুর
২৪ডি: ৫৭মি:
৮৯ডি: ৩৮মি:
মেলান্দহ
২৪ডি: ৫১মি:
৮৯ডি: ৪২মি:
মাদারগঞ্জ
২৪ডি: ৪৭মি:
৮৯ডি: ৪০মি:
দেওয়ানগঞ্জ
২৫ডি: ০৬মি:
৮৯ডি: ৫১মি:
বকশীগঞ্জ
২৫ডি: ০৬মি:
৮৯ডি: ৪৭মি:

তথ্য সূত্রঃ ২০০১ সালের জনসংখ্যা শুমারী মোতাবেক

মানচিত্র সম্ভার :


































এক নজরে :
আয়তন
২০৩১.৯৮ বর্গ কিলোমিটার
লোক সংখ্যা  (পুরুষ- ১১,০৯,০৪২,
মহিলা- ১০,৮৩,৭৪৮)
(জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার- বর্তমান ১.৪৮% ও পূর্বেকার ২.১৭%)
২১,৯২,৮৯০ জন
সংসদীয় এলাকার তথ্য
১৩৮-জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ ও বক্শীগঞ্জ)
১৩৯-জামালপুর-২ (ইসলামপুর)
১৪০-জামালপুর-৩ (মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ)
১৪১-জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী)
১৪২-জামালপুর-৫ (জামালপুর সদর)
উপজেলার সংখ্যা
০৭ টি
থানার সংখ্যা
০৮ টি ( ১টি নৌ-থানা)
ইউনিয়নের সংখ্যা
৬৮ টি
গ্রামের সংখ্যা
১৩৬২ টি
মৌজার সংখ্যা
৮৪৪ টি
পৌরসভা
০৬ টি
মোট জমির পরিমাণ
৫,১২,৮১৯ একর
আবাদী জমি
৩,৭২,৮৯৯ একর
প্রধান অর্থকরী ফসল
ধান, পাট, ইক্ষু আলু, তামাক, বেগুন, সরিষা, ভূট্টা
উল্লেখযোগ্য শিল্প কারখানা
যমুনা সার কারখানা, সরিষাবাড়ী
জিল বাংলা সুগার মিল, দেওয়ানগঞ্জ
কাঁথা ও সূচি শিল্প

অন্যান্য তথ্য :
প্রধান নদ নদী
০৩ টি (যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ঝিনাই)
নদী পথ
১২৫ কি.মি.
পাকা রাস্তা
৭৭২.৬৭ কি.মি.
আধা-পাকা রাস্তা
১২০.৫৫ কি.মি.
কাঁচা রাস্তা
৩৩৭৪.৯০ কি.মি.
রেল পথ
১০৮.৫০ কি.মি.

জেলা সদর থেকে থানা সদর সমূহের দূরত্ব ও যাতায়াত ব্যবস্থা :
মেলান্দহ
১৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
ইসলামপুর
৩৪ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
দেওয়ানগঞ্জ
৪৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
সরিষাবাড়ী
২৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
বক্শীগঞ্জ
৫০ কি.মি. (সড়ক পথে)
মাদারগঞ্জ
৩৪ কি.মি. (সড়ক পথে)

উপজেলা সংক্রান্ত তথ্যাবলী



জামালপুর সদর
ক্রমিক নং
নাম ও পদবী
মোবাইল নং
১।
বিজন কুমার চন্দ, চেয়ারম্যান
০১৭১১-০৪৮৯৭৪
২।
মোঃ খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১৯-৪৩১১৪৩
৩।
কৃষিবিধ রায়হানা রহমান (লতা), ভাইস চেয়ারম্যান
০১৯২২-৬৯৮৫৯৯
মাদারগঞ্জ
১।
ওবায়দুর রহমান বেলাল, চেয়ারম্যান
০১৭৩০-১৬৩২৩১
২।
মাহবুব আলম, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৮২০-৫০৮৪৯০
৩।
সমসাদ আরা বেগম, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১০-৬৬৩১৮৩
বকসীগঞ্জ
১।
আব্দুর রউফ তালুকদার, চেয়ারম্যান
০১৭১৯৪৩০২৭৯
২।
গাজী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৯১১-৩৯০৭১৭
৩।
রহিমা, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১৬-৬৬৩৮৬২
০১৭২১-০৭২৫২৪
দেওয়ানগঞ্জ
১।
মোঃ ইস্তিয়াক হোসেন দিদার, চেয়ারম্যান
০১৭১১-৫২৫০৬০
২।
মোঃ সোলায়মান হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১৮-৪৮৬৩৬০
৩।
বেগম রোকেয়া সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১৬-৮৬৯২৪৩
মেলান্দহ
১।
ফারহান জাহেদী সফেন, চেয়ারম্যান
০১৭১১-৯৬১২১১
২।
মোঃ হায়দর আলী, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭১৫-৯৮৫৬৯৭
৩।
জেসমিন আখতার, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭২৫-১৫৪২১৩
ইসলামপুর
১।
মোঃ আব্দুল বারী মন্ডল, চেয়ারম্যান
০১৭২৫-৮৫০৭৩১
২।
মোঃ শফিকুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭২১-৪৯৩৮৬৫
৩।
জাহানারা পারভিন, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৯১৭-৫২৭১১৮
সরিষাবাড়ী
১।
মোঃ আব্দুল মালেক, চেয়ারম্যান
০১৭১৫-১১৮৮৩৫
২।
মোঃ আব্দুছ ছাত্তার তরফদার, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৭২৮-১১৪৮৪৪
৩।
বেগম জহুরা লতীফ, ভাইস চেয়ারম্যান
০১৯১১-৬১৩৩৩৮



ইউনিয়ন সংক্রান্ত তথ্যাবলী


ক্রমিক নং
উপজেলার নাম
ইউনিয়নের নাম
চেয়ারম্যানের নাম
মোবাইল নম্বর
জামালপুর সদর
কেন্দুয়া
মোঃ হাসমত আলী
০১৭১২-৮০৫৮০৩
শরিফপুর
মোঃ জহুরুল হক আকন্দ
০১৭১৬-১৯৪৬৭৫
লক্ষিরচর
মোঃ আফজাল হোসেন বিদ্যুৎ
০১৭১৫-০১৫০৭৭
ইটাইল
মোঃ আবুবকর সিদ্দিক
০১৭২০-৫১১৪৭৫
নরুন্দী
মোঃ আলা উদ্দিন খাঁন আলম
০১৭১৬-০৩৭০৯০
বাঁশচড়া
মোঃ আব্দুল জলিল
০১৭১২-১২৩২০২
রানাগাছা
আলহাজ্জ মোঃ আব্দুল জলিল
০১৮১৮-৩২৮২৮১
তুলশীরচর
মোঃ আবু তালেব আবু
০১৭১২-৬৪৩২১৬
ঘোড়া ধাপ
মোঃ ছোহরাব আলী
০১৭২১-৯৯২২৬৫
১০
শ্রীপুর
মোঃ এনায়েতুর রহমান
০১৭১৩-৫৩১৭২৯
১১
রশিদপুর
মোঃ ওবায়দুল্লাহ
০১৭১২-১৯৫১৬৪
১২
শাহবাজপুর
মোঃ আঃ রশিদ
০১৭১৬-৫২৩৮৮৮
১৩
তিতপল্লা
মোঃ সোহরাব আলী
০১৭২৮-০২০৭৮৬
১৪
দিগপাইত
আলহাজ ডাঃ এ. কে. এম.মাহবুবুর রহমান
০১৭১১-৬১৯০০২
১৫
মেষ্টা
একেএম আজাদ মুক্তা
০১৭১২-১১৩৮৭৮
১৬
দেওয়ানগঞ্জ
দেওয়ানগঞ্জ
মোঃ ছাইদুজ্জামান
০১৭১২-১২০৬৬৬
১৭
চরআমখাওয়া
মোঃ নাজিম উদ্দিন
০১৭৩২৪৫৭৩০৮
১৮
চিকাজানী
মোঃ আব্দুর রউফ
০১৭১১-৬৪৫৪২৯
১৯
বাহাদুরাবাদ
মোঃ ছইমউদ্দিন
০১৭১৫-৩৮২৪৬৬
২০
হাতীভাঙ্গা
আবু তাহের সরকার
০১৭১২-২৯৬১৮৫
২১
চুকাইবাড়ী
এ.কে.এম.মঞ্জুরুল হক
০১৭১২-১০৩৬৫৭
২২
ডাংধরা
মোঃ আবুল হোসেন সরকার
০১৭৪৬২৩০০৭১
২৩
পাররামরামপুর
মোঃ সুরুজ উদ্দিন
০১৭৩৯-৫৩১৮৩৪
২৪
সরিষাবাড়ী
আওনা
মোঃ নূরুজ্জামান তালুকদার
০১৯২১-৪৭৩৫৫৪
২৫
পিংনা
কে.এম.ছানোয়ার হোসেন
০১৭১১-৪৮৯৮৬৫
২৬
ভাটারা
মোঃ আক্রাম হোসেন
০১৭১৩-৫৭৯২৩৯
২৭
সাতপোয়া
মোঃ আব্দুল হাকিম সরকার
০১৭১৬-৬০৬৯৬৬
২৮
মহাদান ইউপি
আব্দুল আউয়াল
০১৭১৩-৫৭৫৮৭৩
২৯
ড়োয়াইল
গোলাম মোসত্মফা
০১৭১৮-৯৬৬১৩১
৩০
কামরাবাদ
মোঃ লুৎফর রহমান মাসুম
০১৭১৮-৫৩৩৫৬১
৩১
পোগলদিঘা
মোঃ শামছুদ্দিন
০১৭২৪-৭৪৫৮৫৪
৩২
মাদারগঞ্জ
আদারভিটা
মোঃ আলতাফুর রহমান( আতা)
০১৭১২-৬৯৮০৪৪
৩৩
চরপাকেরদহ
মোঃ তৌফিকুল ইসলাম
০১৭১৬-৩৩৯৮৫৬
৩৪
জোড়খালি
মোঃ আব্দুসসামাদ
০১৭১৯-৩১২২৮৪
৩৫
গুনারীতলা
মোঃ আব্দুল মান্নান
০১৭১২-০৮৩৬২৫
৩৬
বালিজুড়ী
মোঃ মোজাম্মেল হক
০১৭১৬-০৪৭৭১১
৩৭
কড়ইচড়া
মোঃ মোখলেছুর রহমান মুক্তা
০১৭১৬-১৭০৮৫৪
৩৮
সিধুলি
মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার
০১৭৩২-৯৯৪১৫৭
৩৯
মেলান্দহ
দুরমুট
এ.কে.এম.বদিউজ্জামান খান বাদল
০১৭১২-৫৭৮৮৪৪
৪০
কুলিয়া
হাজী হাফিজ মওলা
০১৭২১-২০৪৯৮৬
৪১
মাহমুদপুর
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
০১৭১২-৭১৫৩৪৪
৪২
নাংলা
মোঃ কিসমত পাশা
০১৭১২-১২৫১৫৬
৪৩
নয়ানগর
মোঃ আবুব বকর সিদ্দিক
০১৭১৮-৯০৩৮৩৮
৪৪
আদ্রা
মোঃ সিদ্দিক আহমেদ
০১৭১২-৯৬৬৪৮৭
৪৫
মেলান্দহ
চরবানিপাকুয়িা
মোঃ লুৎফর রহমান চান
০১৭১৬-৮১৮৬৮১
৪৬
ফুলকোচা
মঞ্জুরুল ইসলাম (মঞ্জু)
০১৭১১-৯৩৬৫৯৫
৪৭
ঝাউগড়া
তফিল উদ্দিন
০১৭১৮-৩৪২১৫৭
৪৮
ঘোষেরপাড়া
মোঃ আব্দুল হাকিম শামিত্ম
০১৭১২-০৮১৬৬৪
৪৯
শ্যামপুর
আবুল হোসাইন বাদল
০১৭১৬-৭৭৭৩১৫
৫০
ইসলামপুর
কুলকান্দি
সরদার মোঃ জুবাইদুর রহমান
০১৭১১-১২৯৩৯০
৫১
চিনাডুলি
মোঃ কামরুজ্জামান পাহলোয়ান
০১৭২১-১৫৮৫৩৪
৫২
বেলগাছা
মোঃ আব্দুর রৌফ ( দানু)
০১১৯১-২৮৯৬৯৫
৫৩
নোয়ারপাড়া
মোঃ আসাদুজ্জামান
০১৭১২-৮১৭২২৩
৫৪
সাপধরী
আছাদুজ্জামান
০১৭১৬-০৭১৯২৮
৫৫
পাথর্শী
মোঃ হাসমত আলী খান
০১৭১২-৫৩১৮৫৯
৫৬
পলবান্দা
মোঃ শাহাদৎ হোসেন স্বাধীন
০১৭১৬-০৯৯০০৮
৫৭
গাইবান্দা
মাকসুদুর রহমান আনসারী
০১৭১৬-১৭৫৩৪৩
৫৮
ইসলামপুর
মোঃ জয়নাল আবেদীন
০১৭১৬-৪৪২৮৩৩
৫৯
চরপুটিমারী
মোঃ সহিদুর রহমান
০১৭৩৬-৭৪০৬৯৬
৬০
চরগোয়ালিনী
মোঃ নূর নবী নূর
০১৭১৬-৯৩৪৫৫০
৬১
গোয়ালেরচর
মোঃ লস্কর আলী
০১৮১২-২৮৭৮৭৩
৬২
বকশীগঞ্জ
ধানুয়া
মোসত্মফা কামাল
০১৭২৭-০৩১৯৯৮
৬৩
বগারচর
মোঃ হামিদুর রহমান ফটিক
০১৭৩৪-১৯১১০৫
৬৪
বাট্রাজোড়
মোঃ মুখলেছুর রহমান
০১৭১৮-৬৪৭৮২৫
৬৫
মেরুরচর
মোঃ মাহবুবুর রহমান
০১৭১২-৯৬৯২২৪
৬৬
বকশীগঞ্জ
মোঃ মানিক সওদাগর
০১৭১৫-৮০৬৪৩৩
৬৭
সাধুরপাড়া
মোঃ হুমায়ূন কবীর
০১৭১৬-২০৬৪৩১
৬৮
নিলক্ষিয়া
মোঃ নজরুল ইসলাম ছাত্তার
০১৭১৫-৭৬৫১৬৯



জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব   (জামালপুর জেলা)


এ জেলায় বেশকিছু প্রখ্যাত ব্যক্তি রয়েছে। যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতি সম্পন্ন। এদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি গণ হলেন : নাটকে বাংলার মুকুট বিহীন সম্প্রাট আনোয়ার হোসেন, জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নাট্যকার আমজাদ হোসেন, প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন , বিখ্যাত গীতিকার ও শিল্পী মরহুম নজরুল ইসলাম বাবু, নাট্যকার মরহুম এম এস হুদা ও গিয়াস মাস্টার, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনাকারী মরহুম হাসান হাফিজুর রহমান, মরহুম স্পীকার আব্দুল করিম,মরহুম প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল জব্বার, মরহুম আ: ওয়াদুদ মাস্টার,মরহুম প্রিন্সিপাল রইছ উদ্দিন, মরহুম আশেক মাহমুদ তালুকদার, মরহুম নঈম মিয়া, স্বর্গীয় নলিণী মোহন দাশ মাখন বাবু, শ্রী বঙ্কিম বিহারী রাউৎ,মরহুম আব্দুর রহিম তালুকদার, ভাষা সৈনিক মরহুম এডভোকেট আনোয়ারুজ্জামান,মরহুম কাদা মিয়া,বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান, সচিব গোলাম রববানী, মরহুম আব্দুর রশিদ,মরহুম মজিবর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।

 জামালপুর জেলার শিল্প ও সংস্কৃতি











জেলায় বেশকিছু শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছেএর মধ্যে এশিয়ার বৃহত্তম সার কারখানা যমুনা ফার্টিলাইজার লিঃ, দেওয়ানগঞ্জ জিল বাংলা সুগার মিলস লিঃ, আলহাজ্ব জুট মিলস ও পপুলার জুট মিলস সরিষাবাড়ী, বিসিক শিল্প নগরী জামালপুর উল্লেখযোগ্য

জামালপুর জেলা শহরের দাপুনিয়ায় ২৬.৩০ একর জমিতে বিসিক শিল্প নগরী ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়এখানে স্থানীয় চাহিদা ও কাচামাল নির্ভর ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছেএসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃস্টি হয়েছে।


জামালপুর জেলার  খেলাধুলা



কথায় বলে ‘’ সুস্থ দেহে সুস্থ মনের বাস’’। জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি খেলাধূলার চর্চা করা খুবই প্রয়োজন। কারণ খেলাধূলা ব্যতীত জীবন পূর্ণতা পায় না। ফলে খেলাধূলা জীবনের জন্য প্রয়োজন। খেলাধুলায় এক সময় তৎকালীন  জামালপুর মহকুমার খুবই সুনাম ছিল। জামালপুরে ফুটবল, হা-ডুডু, হকি খেলার খুবই প্রচলন ছিল। জামালপুর জেলা স্বুল, দেওয়ানগঞ্জ সুগার মিল, পিংনা হাই স্কুল এবং নান্দিনা মহারাণী হেমম্তকুমারী সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত খেলাধুলার চর্চা হত। এখানকার খেলোয়াড়গণ জাতীয়,আঞ্চলিক এবং বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ নিত। বিগত সময়ে জামালপুর মহকুমা খেলাধুলায় বিশেষ কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়। বিশেষ করে নান্দিনা স্বুল পশ্চিম পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন ছিল । এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বর্গীয় নলিনী মোহন দাশ মাখন বাবু নিয়মিত খেলাধুলার চর্চা করাতেন। যারা খেলাধুলায় ভাল ছিল তাদের জন্য বেতন ও হোস্টেলে খাওয়া ফ্রি ছিল। যার ফলে ভাল খেলোয়াড় তৈরী করা সহজ ছিল। এখানে দেশের অন্যান্য জেলা থেকে খেলোয়াড় সংগ্রহ করে  এনে তাদের কে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভাল খেলোয়াড়ে পরিণত করা হত। এ জেলায় এক সময় লাঠি খেলার প্রচলন ছিল। সারা বছরই লাঠি খেলা হত । তবে মহররম মাসে এ খেলার আয়োজন বেশী হত। এলাকা ভিত্তিক প্রতিযোগিতা হত। ভাল ভাল পালোয়ানগণ বিভিন্ন দলে খেলত। অনেক সময় খেলা নিয়ে নানা অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটত। নদী মাতৃক জামালপুর জেলায় বর্ষকালে নৌকাবাইচ হত। বিভিন্ন থানার মধ্যে  প্রতিযোগিতা হত। বর্ষাকালে মানুষ ঘরে অলস বসে না থেকে নৌকাবাইচকেই চিত্তবিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিত। বৈশাখ মাসে হাল খাতার মহোসব হত। মানুষ নানা ভাবে উৎসবটি উদযাপন করত। এ সময় ঘোড় দৌড়ের আয়োজন বেশী হত। বিভিন্ন জেলা থেকে তেজী ঘোড়া এনে সমাজের বিত্তবান ও সৌখিন মানুষেরা এসব খেলার আয়োজন করত। আবালবৃদ্ধবণিতা এসব ঘোড় দৌড় উপভোগ করার জন্য আসত। এ মেলায় গৃহস্থালী ও রকমারী জিনিষ পত্রাদি বিক্রয় হত।


বর্তমান জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেট।র মো: রকিবুল হাসান(নয়ন) জামালপুর জেলার প্রতিনিধিত্ব করছেন।








 জামালপুর জেলার ভাষা ও সংস্কৃতি





ভাষা :

দেশের অন্যান্য স্থানের মত জামালপুরেও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা প্রচলিত আছে। জামালপুর জেলার একেক উপজেলার ভাষার উচ্চারণ একেক রকম। ফলে ভাষা শৈলী ও উচ্চারণগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নমুনা হিসেবে জামালপুরের কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষা উল্লেখ করা হলো ‘‘দেরী অব ক্যা, দন্ডেই বাজার থনে ঘুইরা আমু ‘’। ‘‘ইষ্টিরে বহাইয়া থও, বাত খায়ে যাব।’’ সাগাই নহুল খাছে ?

লোক সংস্কৃতি :



সংস্কৃতি একটি জাতির মৌলিক পরিচয় বহন করে। এর ব্যাপকতা বিশাল ও বিস্তৃত। সংস্কৃতি হচ্ছে জীবনের সর্বাঙ্গীন প্রতিভা। এর গতি বহতা নদীর মত। সাহিত্যিক মোতাহার হোসেন চৌধুরীর মতে ‘‘সংস্কৃতি মানে সুন্দর ভাবে, বিচিত্র ভাবে, মহৎ ভাবে বাঁচা’’। মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করেই সংস্কৃতি গড়ে উঠে। অন্য ভাবে বলা যায় যা জীবনকে সংস্কার করে, চালিত করে অথবা যার মাধ্যমে জীবন আবর্তিত হয় তাই সংস্কৃতি।

সংস্কৃতি :

জামালপুর জেলা তথা প্রাক্তন জামালপুর মহকুমা ক্রীড়া ক্ষেত্রে যেমন সারাদেশে সুপরিচিত ছিল তেমনি সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে জামালপুর সংস্কৃতি ক্ষেত্রে ময়মনসিংহের প্রতিনিধিত্ব করত। জামালপুরের সিংহজানী, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ  এবং নান্দিনাতে জমিদার আমলে নাটক থিয়েটার,গান বাজনা ও যাত্রার বিশেষ প্রচলন ছিল। জমিদার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিমনা ও বিত্তবানদের পৃষ্টপোষকতায় এসব কর্মকান্ড চলত। ফলে দেশের সংস্কৃতির অঙ্গণে আজও  বহু গুণী শিল্পীর পদচারণা লক্ষ্য করা যায়। এখানে নাটকে আনোয়ার হোসেন, আমজাদ হোসেন, মরহুম আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সংগীতে মরহুম ওস্তাদ ফজলুল হক খান, মরহুম নজরুল ইসলাম বাবু, মরহুম এম এস হুদা, মরহুম গিয়াস উদ্দিন মাস্টার, শুশান্ত কুমার দেব কানু ,মরহুম ফরিদ আফগানী, মহি উদ্দিন শ্রীপুরী, আবু জাহিদ লতা, ফজলুল করীম ভানু ,এ,কে, মাহবুব রেজা মতি, মোঃ ছানাউল হক সিদ্দিকী, এস,এম, মফিজুর রহমান, শর্বরী ও এ প্রজন্মের মামুন সারগাম, রাজীব, নোলক বাবু, আলিফ লায়লা মৌসুমী ও শশীসহ অসংখ্য গুণী শিল্পী রয়েছে।

আমাদের জাতির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন একটি অনন্য ও অবিষ্মরণীয় অধ্যায় । এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু তথ্য তুলে ধরা হল :



মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর পটভূমি :

আজ ২১ শে ফেব্রয়ারী আমাদের অমর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আমরা সকলেই জানি বাংলা ভাষাকে আমাদের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবীতে ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনটিতে তৎকালিন পাকিস্তান সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে কিছু সংখ্যক বীর হৃদয় মানুষ দাবী আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। আর তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য পাকিস্তান সরকার নিবির্চারে গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন ছালাম,জববার, রফিক, সফিক, বরকতসহ আরও নাম না জানা অনেকে। সেই থেকে দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে আমরা পালন করে আসছি। তাই আজ আমি এই পবিত্র দিনে ভাষা শহীদদের জানাই শ্রদ্ধা ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
এটি একটি ঐতিহাসিক দিন এবং ঘটনা। প্রতিটি ঘটনারই একটি অতীত, বতর্মান ও ভবিষ্যত থাকে। আমাদের তথা বাঙ্গালীদের বাংলা ভাষা আন্দোলনের একটি অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা যদি একটু পেছন দিক থেকে পযার্লোচনা করে আসি তাহলে আমরা দেখতে পাব বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী ১৯৫২ সালেই প্রথম সূত্রপাত হয়নি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে সব র্প্রথম মত প্রকাশ করেছিলেন ১৭৭৮ সালে একজন বৃটিশ লেখক ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হলহেড। ঐ সময় বৃটিশ কোম্পানী সরকারের ভাষা ছিল ফার্সী । হলহেড দাবী করলেন বৃটিশ ভারতে বাংলায় কোম্পানীর শাসন চালাতে হলে ফার্সির পরিবর্তে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা উচিৎ। এর পর ১৯১৮ সালে শান্তিনিকেতনে ভারতের সাধারণ ভাষা কি হওয়া উচিৎ তা নিয়ে এক আলোচনা সভা হলে ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্যাহ বাংলা ভাষার দাবী করেছিলেন । ১৯২১ সালে ওহাবী আন্দোলনের নেতারা ভারতের রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার জন্য বৃটিশ সরকারকে চাপ দিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী বৃটিশ সরকারকে লিখিতভাবে জানান বাংলা প্রদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়া উচিৎ।
এরপর ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিমলীগের এক কাউন্সিল অধিবেশনে পূবর্লা বাংলার রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার জন্য মুসলিমলীগের সম্পাদক আবুল হাসিম দাবী তুলেছিলেন। এর পর ১৯৪৭ সালের ২৭ শে জুন দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় আবুল মুনসুর আহম্মেদ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার মত প্রকাশ করেন। একই বছর ৩০ শে জুন দৈনিক আজাদ পত্রিকায় বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য অভিমত প্রকাশ করেন কমরেড আব্দুল হক। ১৯৪৭ সালে ১৪ ই আগস্ট ভারতবর্ষ থেকে পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হল। ঐসময়ে পাকিস্তানের ২টি অংশে ৭ টি প্রধান ভাষাভাষির লোক ছিল। তারমধ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলত ৫৪.৬%, আর পাঞ্জাবী ভাষায় কথা বলত ২৮.৪% লোক। তৃতীয় প্রধান ভাষা উর্দু-তে কথা বলত ৭.২% লোক। ফলে দেখা যায় অর্ধেকরও বেশী লোকের ভাষা ছিল বাংলা। বাকী ৪৬% লোকের মধ্যে ৬ টি ভাষা প্রচলিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তান কেন্দ্রিয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল। আমাদের এ অঞ্চলের কিছু ব্যক্তিত্ব পাকিস্তান সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন। কিন্তু কেহই সাহস করে পাকিস্তান সরকারের কাছে এর প্রতিবাদ জানাতে এলেন না। ঐ সময়ে বুদ্ধিজীবিদের একজন অধ্যাপক আবুল কাশেম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে দেখা করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব তুললেন। নাজিমুদ্দিন তাকে গভর্নর জাকির হোসেন এর কাছে পাঠালেন। জাকির হোসেন তাকে কোন প্রকার সহযোগিতা করলেন না। এ পটভূমিতেই পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির রাষ্ট্রভাষাসহ অন্যান্য বৈশম্যমূলক কাযর্কলাপের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য তমদ্দুন মজলিশ নামে একটি বিপ্লবী সংগঠন তৈরী করা হল। অধ্যাপক আবুল কাশেম ছিলেন তমদ্দুন মজলিশের মূল সংগঠক। তমদ্দুন মজলিসের সংগঠকরা উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিরোধীতা করে এবং সাথে সাথে বাংলাকেও উর্দুর সাথে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে আন্দোলনের সূচনা করে। এরপর ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.০০ টায় ঢাকার ১৯ নং আজিমপুরস্থ তমদ্দুন মজলিশের অফিসে অধ্যাপক আবুল কাশেম ভাষা আন্দোলনের ঘোষনাপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠ করেন। সেখানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, নূরুল হক ভূইয়া, শামছুল আলম, আব্দুল মতিন খান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এই দিন বিকাল ৪.০০ টায় ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসের ‘নূপুর ভিলায়’ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্ল্যাহর সভাপতিত্বে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, কবি জসিম উদ্দিন প্রমুখ ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
০৫ নভেম্বর, ১৯৪৭ সালে প্রকাশ্য জনসভায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী তোলা হল এবং ১৪ নভেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিম উদ্দিনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হল। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে প্রথম ছাত্র সভা ও রালী হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ০৬ ডিসেম্বর। প্রধান বক্তা ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী। ৩০ ডিসেম্বর প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এ পরিষদে ২৭ জন সদস্য ছিলেন অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে। এরপর অধ্যাপক আবুল কাশেম ভাষা আন্দোলনের দাবীটি পাকিস্তানের গণপরিষদে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালান এবং গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সাথে আলোচনা করেন । ২৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৮ ধীরেন্দ্র নাথ পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উঙ্খাপন করেন। কিন্তু তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করা হয়। এ প্রেক্ষিতে ২৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডাকা হয়। এরপর ০৪ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন একমাত্র উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার বিবৃতি দেন। এর ফলে ১১ মার্চ সারা দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হয় । এটাই স্বাধীন পাকিস্তানে প্রথম হরতাল। এদিন ব্যাপক ধরপাকড় হল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শামসুল হক, অলি আহাদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ ব্যক্তিরা গ্রেফতার হলেন।
১৬ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলায় ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় মোহাম্মদ তোয়াহা সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি না আসায় জাতির জনক বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে তিনি মিছিলের ঘোষনা দেন। মিছিলটি পূর্ববঙ্গঁ আইন পরিষদের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়।
২১ মার্চ ১৯৪৮, এদিন রেসকোর্স ময়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভাষন দেন। ভাষনে রাষ্ট্রভাষার বিষয়ে এক পযার্য়ে জিন্নাহ বলেন Urdu Urdu should be the language of Pakistan তখন সভাস্থলের পেছন দিকের কিছু কর্মী এবং ছাত্র "no", "no" বলে চিৎকার করে ওঠে। পরের দিন ২২ মার্চ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মিঃ জিন্নাহ-র সাথে দেখা করে স্মারকলিপি দেন।
২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে জিন্নাহ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষন দেন এবং ভাষা সম্পর্কে একই বক্তব্য দেন। আর সঙ্গে সঙ্গে ঐ অনুষ্ঠানে কিছু গ্রাজুয়েট সমবেতভাবে না না বলে প্রতিবাদ করেন। ২৭ শে নভেম্বর ১৯৪৮ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকা আগমন করলে ’ডাকসু’ কর্তৃক তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সেখানেও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী তোলা হয়। এরপর অনেক পথ পরিক্রমা ঘটে।
২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ পাকিস্তানের গণপরিষদের সামনে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ভিত্তিতে মূলনীতি ঘোষনা করেন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান। ০২ অক্টোবর বিকে দত্ত করাচীতে গণপরিষদের সভায় এর বিরোধিতা করেন।
এরপর ১৯৫১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্যা­হ, ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমীনের নিকট বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য স্মারকলিপি দেন। ১১ মার্চ ১৯৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় এক সভার মাধ্যমে আব্দুল মতিনকে আহবায়ক করে ১৩ সদস্যের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন পল্টন ময়দানে ঘোষনা করেন উর্দু একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এর ফলে ২৯ জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বক্তব্যের জন্য প্রতিবাদ সভা হয়। ০৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকা শহরে ধর্মঘট ডাকা হয় এবং ২১ ফেব্রুয়ারী সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল, সভা এবং বিক্ষোভ মিছিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তৎকালীন সরকার ২০ ফেব্রুয়ারী এক ঘোষনায় ঢাকা শহরে ২১ ফেব্রুয়ারী হতে ১ মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেয়। ফজলুল হক হলের ভিপি শামসুল আলম এবং জিএস আনোয়ারুল হক খান ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য ছাত্রদের সংগঠিত করতে থাকেন।
২১ শে ফেব্রুয়ারী খুব ভোর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ২/১ জন করে ছাত্র এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা প্রাঙ্গণে (বর্তমানে যেখানে ঢাকা মেডিক্যাল করেজ ) জমায়েত হতে থাকে। সকাল ১১.০০ টায় আমতলায় ছাত্র যুবকদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এম আর আক্তার মুকুল এর প্রস্তাবনায় ছাত্রনেতা গাজীউল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। গাজীউল হক তার বক্তৃতায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষনা দেন এবং বলেন ১০ জন করে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এই ১৪৪ ধারা ভঙ্গের কাজে অংশ গ্রহন করতে হবে। ১ম ১০ জনের গ্রুপে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আলী আজমল। ২য় দলে নেতৃত্ব দেন আব্দুস সামাদ এবং ৩য় দলে নেতৃত্ব দেন আনোয়ারুল হক খান ও আবু জাফর ওবায়াদুল্ল্যাহ। ৩ টি দলকেই সংগে সংগে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং সমবেত ছাত্রদেরকে পুলিশ ঘিরে রাখে। এই জনতার মধ্যে কিছু ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছিল। এই ছোট ছোট শিশুদের অবরোধ থেকে বের করে দেয়ার জন্য ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্ল্যাহ ছাত্রদের মেডিক্যাল কলেজের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলতে বলেন। ছাত্ররা মূহুর্তের মধ্যে দেয়াল ভেঙ্গে শিশু কিশোরদের বের করে দেন। বেলা আনুমানিক ২.০০ টার সময় গণপরিষদের সদস্যগণ পরিষদের দিকে যাওয়া শুরু করলে ছাত্ররা তাদের বাধা দেয়। এরপর ছাত্ররাই গণপরিষদের দিকে যাওয়া শুরু করলে পুলিশ নিবির্চারে গুলি চালাতে থাকে। বিকাল ৪.০০ টার দিকে মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে ছাত্ররা বিক্ষোভ করতে থাকলে পুলিশ আবারো গুলি চালায়। এই গুলিতে আব্দুল জববার, আবুল বরকত, রফিক উদ্দিন আহমেদ, মোঃ সালাহ্উদ্দিন, আব্দুস সালাম, শফিউর রহমান শহীদ হন। এ ছাড়া কয়েকশত আহত হন। ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মূহুর্তের মধ্যে গুলি বর্ষনের প্রতিক্রিয়া সারা দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল ৩.০০ টার সময় পূর্ব পাকিস্তান বিধান সভার স্পীকার আব্দুল করিম এর সাথে মৌলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিস, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, শামসুদ্দিন আহম্মদ, মনোরঞ্জন ধর এর বাকবিতন্ডা শুরু হয়। গুলি হওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে রেডিও শিল্পিরা ধর্মঘট করে। আন্দোলনের ধারা কেমন হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্ররা এক বৈঠকে বসে এবং মেডিকেল কলেজের ভিপি গোলাম মাওলাকে আহবায়ক করে ছাত্র সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। এই ছাত্র সংগ্রাম কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২২ শে ফেব্রুয়ারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের প্রাঙ্গণে গায়েবী জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারী পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের যে স্থানে পড়েছিল সেস্থানে শহীদ মিনার নির্মানের পরিকল্পনা করেণ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা। ২৪ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন শহীদ সফিউর রহমানের পিতা মৌলভী মাহবুবুর রহমান। ২৮ জানুয়ারী ১৯৫৩ তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারীকে শহীদ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১২ আগষ্ট ১৯৫৫ মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ সব নিয়ম কানুন অমান্য করে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলায় বক্তৃতা শুরু করেন।
১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৬ পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ও উর্দুকে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৬ সকাল ৯.০০ টায় পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আবু হোসনে সরকার, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং শহীদ বরকতের মা হাসিনা খাতুন মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সামনে শহীদ মিনারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
১২ মার্চ ১৯৭৫ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রভাষা বাংলা হবে মর্মে সরকারী আদেশ দেন। ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাভাষীরা এদিন থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের দিনটিকে বেসরকারীভাবে বাংলাভাষা দিবস হিসেবে পালন শুরু করে।
৯ জানুয়ারী ১৯৯৮ একটি কমিটির কার্যবিবরণীর মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য প্রস্তাব জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের নিকট প্রেরণ করা হয়। ২৯ মার্চ ১৯৯৮ তারিখ পুণরায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্মারকলিপি দেয়া হয়। সেখান থেকে বলা হয় জাতিসংঘের কোন সদস্য দেশকে এ প্রস্তাবটি সাধারণ সভায় উপস্থাপন করতে হবে। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট বিষয়টি বলা হলে তাঁর সহযোগিতায় ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ তারিখ প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর দপ্তরে ফ্যাস্ক করে পাঠান হয় এবং ইউনেস্কোর সচিব কফিল উদ্দিন আহমদ প্রস্তাবটি পেশ করেন এবং ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ সভায় পি­নারি সেশন-১৮৮ ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এরপর আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা গৃহীত হল।



ভাষা আন্দোলনে জামালপুর বাসির অবদানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ :


বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনে জামালপুর জেলারও এক ঐতিহ্যমন্ডিত অবদান রেখেছে । ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরের স্কুল ছাত্র আব্দুস ছোবহান " ইয়ে আজাদী ঝুট হ্যায় " মর্মে এক প্রবন্ধ পাঠ করেন। তাকেঁ স্কুল থেকে টি সি দেয়া হয়। তার ভাই আব্দুস সাত্তারকে গ্রেফতার করে ১ মাসের ডিটেনশন দেয়া হয় । ১৯৫১ সালে জামালপুরে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে "প্রবাহ সাহিত্য মজলিশ" নামে একটি সংগঠন গড়ে উঠে। সৈয়দ ইমামুর রশিদ, আব্দুস সোবহান, আব্দুস সাত্তার, ক্ষিতিশ তালুকদার, অরুন তালুকদার, অধ্যাপক জহুরুল ইসলাম প্রমূখ এর সাথে জড়িত ছিলেন । ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি আওয়ামী মুসলিম লীগ নেতা আলী আহমদকে সভাপতি করে আশেক মাহমুদ কলেজে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ।এতে অংশ নেন বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী জান্নাত আরা, সিংহজানী স্কুলের কাদের, কুদ্দুস, স্টেশন রোডের কুদ্দুস মল্লিক, ছনকান্দার কালু, শাহপুরের সামাদ মন্ডলসহ অনেকে।
১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ডাকা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি বিরাট মিছিল হয়। এর ফলে আখতারুজ্জামান মতি,দিদারুল আলম খুররম, সৈয়দ আব্দুস সোবহান প্রমূখ নেতাদের নামে পুলিশ হুলিয়া জারি করে ।জামালপুর, ইসলামপুর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ থানায় ধমর্ঘট আংশিক সফলভাবে পালিত হয়। মেলান্দহে ছাত্রদের উপর পুলিশ নিমর্মভাবে হামলা চালায় । ২২ ফেব্রুয়ারি জামালপুরে শ্লোগান ওঠে " রক্তের বদলে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই নূরুল আমীনের কল্লা চাই "। ডাকঘর ছাড়া শহরের সমস্ত অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়। ছেলেরা মিছিল নিয়ে সরকারী হাই স্কুলে (বতর্মান জিলা স্কুল) যাওয়ার পথে পুলিশ ফাড়িঁর অফিসার খুরশিদ জাহান ছাত্রনেতা দিদারুল আলম খুররমকে গ্রেফতার করে। এরপর ঐ রাতে আরও ৮ জন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ৭ দিন জামালপুর জেলে রেখে ১ মাসের ডিটেনশন দিয়ে ময়মনসিংহ জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি পিংনা হাইস্কুল মাঠে হাতেম আলী খানের সভাপতিত্বে এর বিরাট সভা হয়। ২৪ শে ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন থানায় সভা হয় এবং শোভাযাত্রা বের হয়। ২৫ তারিখ গোপালদত্তের মাঠ এবং হিন্দু বোর্ডিং মাঠে বিশাল সমাবেশ হয় । ২৭ ফেব্রুয়ারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্যাহ আল মামুনের পিতা এ,এইচ,এম কুদ্দুসের সভাপতিত্তে এক সভায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা ঘোষনার দাবী জানান হয়। জামালপুরের থানাগুলোর মধ্যে সরিষাবাড়ী বিশেষ ভূমিকা রাখে । এখানকার হাতেম আলী খান, হরুনর রশীদ তালুকদার, আব্দুস সাত্তার প্রমূখ উজ্জল ভূমিকা রাখেন। এছাড়া জামালপুরের ওস্তাদ ফজলুল হক, মো: আছাদ, আশরাফ ফারুকী, এন, আর জামালী প্রমূখ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।




জামালপুর জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা



জামালপুর জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই ভাল। তবে পূর্বে এ জেলার অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটেই ভাল ছিল না। সড়ক পথের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। মানুষ নৌ পথে ও পায়ে হেটে যাতায়াত করত। তবে বৃটিশ আমল থেকেই ঢাকা থেকে বাহাদুরাবাদ এবং জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের সাথে ট্রেণ যোগাযোগ ছিল। রেলপথে মানুষ স্বাচ্ছন্দে কম খরচে যাতায়াত করতে পারতেন। বর্তমানে ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে জামালপুরে যাতায়াত করা যায়। ঢাকা থেকে রেলপথে জামালপুরের দূরত্ব ১৭৭ কিঃমিঃ এবং সড়ক পথের দূরত্ব ২০০ কিঃমিঃ। ৪টি আন্ত:নগর ট্রেনসহ- বেসরকারী ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে। তাছাড়া জামালপুর থেকে দেশের প্রায় সবগুলো জেলাতেই বাসযোগে যাতায়াত করা যায়। সবকটি উপজেলার সাথেই সড়ক পথে যাতায়াত করা যায়। জেলা সদর থেকে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলার দূরত্ব সবচেয়ে বেশী । অন্যান্য উপজেলার দূরত্ব খুব একটা বেশী নয়।

জামালপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেন /বাস এর সময়সূচীঃ

ট্রেন : (ভাড়া-১ম শ্রেণী:১৫০/= সাধারণ:৫০-৮০/=)

স্টেশন
গাড়ীর নাম
ট্রেন ছাড়ার সময়
ফোন ও মোবাইল নং
জামালপুর জং
আন্ত:নগর তিস্তা
আপ-১৫:৪০
ডাউন-১১:৪৭
স্টেশন মাস্টার- ০৯৮১-৬৩০৪০
জিআরপিথানা-০৯৮১-৬৩৩৬৪

আন্ত:নগর যমুনা
আপ-২১:৩৮
ডাউন-৩:৪৫


আন্ত:নগর ব্রক্ষ্রপুত্র
আপ-২২:৩৮
ডাউন-৭:০৬


আন্ত:নগর অগ্নিবীনা
আপ-১৩:৪৭
ডাউন-১৭:১০

বাসস্ট্যান্ড
বাসের নাম
বাস ছাড়ার সময়
ফোন ও মোবাইল নং
ভকেশনাল মোড়
প্রতিনিধি(চট্রগ্রামগামী)
শাহজামাল(সিলেটগামী)
পদ্মা(বগুড়াওরাজশাহীগামী)
সন্ধে ৭:৩০টা
রাত ৮:৩০টা
সকাল ৮টা
০১৭১১-১৫৯৭৯২
০১৭১৬-১৫২৯৪৮
বাসটার্মিনাল
(বিশ্ব রোড়)
মহানগর(ঢাকাগামী)
ভোর ৫:৩০হতে ২০ মিঃ পর পর

বাসটার্মিনাল
(ছনকান্দা)
রাজীব(ঢাকাগামী)
সকাল৬;৩০ হতে
(৩৫মিঃ পর পর)
০১৭১৬-১৫২৯৪৮




জামালপুরে মুক্তিযুদ্ধ:



১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমা একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জামালপুর একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে রয়েছে। ৬৯ সনের গণঅভুত্থান শুরুর সাথে সাথে জামালপুরের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রজনতা ও আপামর মেহনতি মানুষ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে দূর্বার গণআন্দোলনের সূচনা করে। পরবর্তী সময়ে ৭০ এর জাতীয় নির্বাচনে জাতীর জনক বঙ্গঁবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে একক সংখ্যাঘরিষ্ঠতা অর্জন করলে জেনারেল ইয়াহিয়া খান নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর তালবাহনা এবং জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকতে বিলম্ব করায় জনগণকে  এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামার আহবান জানান। এদিকে পাকিস্তানী শাসকগণ এ বিষয়ে কোনরুপ ব্যবস্থা না নেয়ায় সারাদেশে আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। প্রতিদিনই সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ হতে থাকে। এদিকে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী বঙ্গঁবন্ধুকে ১ দফা অর্থাৎ স্বাধীনতা আন্দোলনের পরামর্শ দেন। বঙ্গঁবন্ধু ৭ মার্চ  রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা আন্দোলনে সকলকে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানান। তার আহবানে সাড়া দিয়ে জাতি সারাদেশে আন্দোলন আরো বেগমান করে তুলে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী কোনরু উপায় না দেখে বঙ্গঁবন্ধুকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়ে নানাভাবে আন্দোলনকে প্রলম্বি করতে চেষ্টা করে । কিন্তু বঙ্গঁবন্ধু স্বাধীনতার প্রশ্নে অবিচল থেকে কোন প্রলোভনে সাড়া দেননি। পাকহানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ কালোরাত্রিতে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরীহ মানুষের উপর নির্মম হত্যাজজ্ঞ সংঘঠিত করে । এ হত্যাজজ্ঞই স্বানীনতা সংগ্রামকে আরো ত্বরান্বি করে।

বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর স্মৃতি সৌধ

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জামালপুর একটি অন্যতম অধ্যায়। যুদ্ধকালীন সময়ে সারাদেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। জামালপুরকে ১১ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১১ সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে কর্ণেল তাহের ও জেনারেল জিয়াউর রহমান। উইং কমান্ডার বিডি হামিদুল্লাহ খান উপ-সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এ জেলায় ৫০০০ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন । এতে ৮১ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ বরণ করেন, শহীদ হন প্রায় ১৪০ জন এবং প্রায় ৫০০ জন নিরীহ লোককে গণহত্যার শিকার হতে হয়েছে। তাছাড়া ৩০০ জন মহিলাকে নির্যাতন করা হয়। বেশীরভাগ যুদ্ধ সংগঠিত হয় ধানুয়া কামালপুর, নারায়নখোলা এবং সরিষাবাড়ীতে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের লাশই পাওয়া যায়নি।

জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর এবং ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জ এলাকা সামরিক যুদ্ধের কৌশলতগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভারতীয় মিত্রবাহিনী মহেন্দ্রগঞ্জ দিয়ে বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর হয়ে যুদ্ধকার্য পরিচালনা করে। মুক্তিযোদ্ধাগণ বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ী ও কাঠারবিলে ক্যাম্প স্থাপন করে এখান থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে প্ররোচিত করে। এ সময় দেওয়ানগঞ্জ এবং বাহাদুরাবাদ ঘাটে পাকহানাদার বাহিনীর লক্ষ্যবস্ত্তর উপর আক্রমণ চালানো হয়। ১৩ নভেম্বর ধানুয়া কামালপুরে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে প্রচন্ড যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তাহের। এ যুদ্ধেই কর্ণেল তাহের বাঁ পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাগণ মরণপন যুদ্ধে হানাদার বাহিনী দীর্ঘ ২১ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ পূর্ব রণাঙ্গনের হানাদার বাহিনীর সুরক্ষি ঘাঁটি কামালপুরের পতন হয়। এ যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ক্যাপ্টেন আহসান মালিকের নেতৃত্বে ২২০ জন সৈন্য আত্মসমর্পন করে। যুদ্ধে অনেক পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিনসহ ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা  এতে শহীদ হন। এ যুদ্ধে হানাদার বাহিনী পরাজয়ের পর দিশেহারা হয়ে যান এবং রণভংগ হয়ে জামালপুর, টাংগাইল এবং ময়মনসিংহের দিকে পিছু হটতে থাকে। মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধাগণ প্রচন্ড প্রতিরোধ গড়ে তুললে হানাদার বাহিনী মনোবল হারিয়ে ফেলে এবং একের পর একের এক পরাজয় বরণ করায় মুক্তিযোদ্ধাগণ বিজয়ের পথে অগ্রসর হতে থাকে। এদিকে ঝিনাই ব্রীজ, নান্দিনা বানারের  রেল ও জেলা বোর্ডের ব্রীজটি ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয় ফলে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তারা অত্যন্ত বিপদে পড়ে যায়।

অবশেষে ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ৫৭২ জন জোয়ান ৩১ বেলুচের ক্যাপ্টেন মশাদসহ আত্মসমর্পন  করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার ধানুয়া কামালপুর হাই স্কুল, জামালপুর শহরের পিটিআই ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস, মেলান্দহ উপজেলার পয়লা ব্রীজ, ঝিনাই ব্রীজ, বানার রেল ব্রীজ ও জামালপুর-ময়মনসিংহ সড়কের বানার ব্রীজ, বাউসী ব্রীজ, সরিসাবাড়ী, দেওয়ানগঞ্জ হাই স্কুলসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা এবং নিরীহ মানুষকে ধরে এনে যে সব ক্যাম্পে হত্যা এবং নির্যাতন করত তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হল:- জামালপুর পিটিআই, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস, ছনকান্দা  শ্বশানঘাট, আশেক মাহমুদ কলেজের ডিগ্রী হোস্টেল, নান্দিনা নেকজাহান হাই স্বুল, বকশীগঞ্জ এন এম উচ্চ বিদ্যালয়, মেলান্দহ উপজেলার মেলান্দহ হাই স্কুল এবং সরিষাবাড়ী  উপজেলার আরামনগর কামিল মাদ্রাসা ও গন্নাথগঞ্জ ঘাট ল্লেখযোগ্য। মুক্তিযোদ্ধাসহ যুদ্ধে নিহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জামালপুর শ্মশানঘাট ও ফওতী গোরস্থান, সরিষাবড়ীর ইস্পাহানী ও বারইপটলসহ জগ্মনাথগঞ্জ ঘাটে  গণকবর দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য  জনাব এনায়েত হোসেন সুজা (দেওয়ানগঞ্জ), মোঃ আনিছুর রহমান ও মোঃ আব্দুল হাকিম (সরিষাবাড়ী) এবং সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল (মেলান্দহ) কে বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।



মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাকুরী কোটা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন :



 এক নজরে জামালপুর জেলা


সাধারণ তথ্যাবলীঃ

জেলা ঘোষণার তারিখ
:
২৬/১২/১৯৭৮ ইং
আয়তন
:
২০৩১.৯৮ বর্গ কিলোমিটার
লোক সংখ্যা (পুরুষ- ১১,১৫,০০০ জন
মহিলা- ১০,৫০,০০০)
(জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার- বর্তমান --% ও পূর্বেকার ১.৪৭%)
(Reference: Population and housing census 2011; Preliminary Result)
:
২২,৬৫,০০০ জন
সংসদীয় এলাকার সংখ্যা নাম ও এলাকা
:
১৩৮-জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ)
১৩৯-জামালপুর-২ (ইসলামপুর)
১৪০-জামালপুর-৩ (মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ)
১৪১-জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী)
১৪২-জামালপুর-৫ (জামালপুর সদর)
উপজেলার সংখ্যা
:
০৭ টি
থানার সংখ্যা
:
০৮ টি ( ১টি নৌ-থানা)
ইউনিয়নের সংখ্যা
:
৬৮ টি
গ্রামের সংখ্যা
:
১৩৬২ টি
মৌজার সংখ্যা
:
৮৪৪ টি
১০
পৌরসভা
:
০৬ টি
১১
মোট জমির পরিমাণ
:
,১২,৮১৯ একর
১২
আবাদী জমি
:
,৭২,৮৯৯ একর
১৩
প্রধান অর্থকরী ফসল
:
ধান, পাট, ইক্ষু, আলু, তামাক, বেগুন, সরিষা, ভূট্টা
১৪
উল্লেখযোগ্য শিল্প কারখানা
:
যমুনা সার কারখানা, সরিষাবাড়ী
জিল বাংলা সুগার মিল, দেওয়ানগঞ্জ
কাঁথা ও সূচি শিল্প

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
১৫
সরকারি মহাবিদ্যালয়
:
০৫ টি
১৬
বেসরকারি মহাবিদ্যালয়
:
৩১ টি
১৭
মাধ্যমিক বিদ্যালয়
:
৩১৪ টি
১৮
প্রাথমিক বিদ্যালয়
:
৫৮৮ টি
১৯
বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়
:
৩৯০ টি
২০
মাদ্রাসা
:
১৮৬ টি
২১
ভি.টি.আই.
:
০২ টি
২২
পি.টি.আই
:
০১ টি
২৩
ভোকেশনাল স্কুল
:
১৬ টি
২৪
বি. এম. কলেজ
:
০৭ টি
২৫
আইন কলেজ
:
০১ টি
২৬
হোমিওপ্যাথিক কলেজ
:
০২ টি
২৭
ফিসারিজ কলেজ
:
০১ টি
জেলা সদর থেকে থানা সদর সমূহের দূরত্ব ও যাতায়াত ব্যবস্থা:
২৮
জামালপুর সদর
:
০০
২৯
মেলান্দহ
:
১৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
৩০
ইসলামপুর
:
৩৪ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
৩১
দেওয়ানগঞ্জ
:
৪৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
৩২
সরিষাবাড়ী
:
২৭ কি.মি. (রেল ও সড়ক পথে)
৩৩
বকশীগঞ্জ
:
৫০ কি.মি. (সড়ক পথে)
৩৪
মাদারগঞ্জ
:
৩৪ কি.মি. (সড়ক পথে)
যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত ও অন্যান্য তথ্য:
৩৫
প্রধান নদ নদী
:
০৩ টি (যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ঝিনাই)
৩৬
নদী পথ
:
১২৫ কি.মি.
৩৭
পাকা রাস্তা
:
৭৭২.৬৭ কি.মি.
৩৮
আধা-পাকা রাস্তা
:
১২০.৫৫ কি.মি.
৩৯
কাঁচা রাস্তা
:
৩৩৭৪.৯০ কি.মি.
৪০
রেল পথ
:
১০৮.৫০ কি.মি.
৪১
ব্রীজ/কালভার্ট
:
৭৭৯ টি
৪২
গ্যাস বিতরণ স্টেশন
:
০১ টি
৪৩
বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন
:
০৩ টি
৪৪
কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি
:
০৯ টি
৪৫
রেলওয়ে স্টেশন
:
১৮ টি
৪৬
স্টেডিয়াম
:
০১ টি
৪৭
দৈনিক পত্রিকা
:
০৮ টি
৪৮
সাপ্তাহিক পত্রিকা
:
১৮ টি
৪৯
মাসিক পত্রিকা
:
০২ টি
৫০
ত্রৈমাসিক পত্রিকা
:
০১ টি
৫১
এতিমখানা (সরকারি- ১, বেসরকারি-১৭)
:
১৮ টি
৫২
আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র
:
০১ টি
পশু সম্পদ সংক্রান্ত:
৫৩
ব্যক্তি মালিকানাধীন গাভীর খামার
:
১০২ টি
৫৪
ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাগলের খামার
:
১৫৫ টি
৫৫
ব্যক্তি মালিকানাধীন ভেড়ার খামার
:
১২২ টি
৫৬
সরকারী মুরগীর খামার
:
০১ টি
৫৭
ব্যক্তি মালিকানাধীন মুরগীর খামার
:
১০৮৪ টি
৫৮
ব্যক্তি মালিকানাধীন হাঁসের খামার
:
১০২ টি
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা:
৫৯
জেনারেল হাসপাতাল
:
০১ টি ( ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট)
৬০
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স
:
০৬ টি
৬১
পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
:
৩২ টি
৬২
রেলওয়ে হাসপাতাল
:
০২ টি
৬৩
টিবি ক্লিনিক
:
০১ টি
৬৪
সরকারী ডাক্তারের সংখ্যা
:
মঞ্জুরী- ১৬৮ টি, কর্মরত-১০১ জন, শুন্য- ৬৭ টি
৬৫
এ্যাম্বুলেন্স (সরকারী)
:
১৫ টি (সচল- ১২ টি, অচল-০৩ টি)
৬৬
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র
:
২৮ টি
৬৭
কুষ্ঠ ক্লিনিক
:
০৭ টি
৬৮
কমিউনিটি ক্লিনিক
:
প্রস্তাবিত ২৬২ টি, চালু - ১৫৮ টি
শিল্প/কারখানা সংক্রান্ত:
৬৯
ভারী শিল্প
:
০৫ টি
৭০
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
:
৫৭৮২ টি
সমবায় সংক্রান্ত:
৭১
কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি
:
০৯ টি
৭২
প্রাথমিক সমবায় সমিতি
:
৯১৩ টি
৭৩
টি.সি.সি.এ. লি
:
০৭ টি
৭৪
বি.এস.এস.
:
২১৮ টি
৭৫
কে.এস.এস.
:
,৩৫৪ টি
৭৬
এম.এস.এস.
:
৮১ টি
ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত:
৭৭
উপজেলা ভূমি অফিস
:
০৭ টি
৭৮
ইউনিয়ন ভূমি অফিস
:
৬৮ টি
৭৯
মোট জমির পরিমাণ
:
,১২,৮১৯ একর
৮০
মোট আবাদি জমির পরিমাণ
:
,৭২,৮৯৯ একর
৮১
কৃষি খাস জমির পরিমাণ
:
২০,০৬৮ একর
৮২
অকৃষি খাস জমির পরিমাণ
:
১২,৪৯৭ একর
৮৩
কৃষি অর্পিত সম্পত্তি
:
,৫৬৪ এবর
৮৪
অকৃষি অর্পিত সম্পত্তি
:
১৭৭.৬৭ একর
৮৫
মোট আদর্শ গ্রামের সংখ্যা
:
৩৪ টি
৮৬
জলমহালের সংখ্যা
:
১৩৫ টি
৮৭
বালু মহালের সংখ্যা
:
০৩ টি
৮৮
কুল ঘাটের সংখ্যা
:
০৪ টি
কৃষি সেচ সংক্রান্ত:
৮৯
প্রধান অর্থকরী ফসল
:
ধান, পাট, ইক্ষু, আলু, তামাক, বেগুন, সরিষা, ভূট্টা
৯০
গভীর নলকূপ
:
৬২৮ টি
৯১
অগভীর নলকূপ
:
১১,৬৯৭ টি
৯২
হস্ত চালিত নলকূপ
:
১৯,৮৫০ টি
মৎস্য সম্পদ সংক্রান্ত:
৯৩
সরকারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার
:
০২ টি
৯৪
বেসরকারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার
:
০৪ টি
৯৫
বেসরকারী পোনা উৎপাদন খামার (নার্সারী)
:
৪৭ টি
ধর্মীয় উপাসানালয়:
৯৬
মসজিদের সংখ্যা
:
,৩৪০ টি
৯৭
মন্দিরের সংখ্যা
:
৪৪ টি
৯৮
গীর্জার সংখ্যা
:
৩৯ টি
দর্শণীয় স্থান:
হযরত শাহ জামাল (রাঃ) এর মাজার শরীফ, জামালপুর জেলা সদর
হযরত শাহ কামাল (রাঃ) এর মাজার শরীফ, দুরমুট, উপজেলা- মেলান্দহ, জেলা- জামালপুর
দয়াময়ী মন্দির, জামালপুর শহর (৩০০ বৎসরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মন্দির)
লাউচাপড়া পিকনিক স্পট, উপজেলা- বকশীগঞ্জ, পর্যটক/অবকাশ যাপনকারীদের জন্য পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থান এবং পাহাড়ের উপর পর্যবেক্ষণ টাওয়ার
যমুনা ফার্টিলাইজার , তারাকান্দি, উপজেলা- সরিষাবাড়ী, জেলা- জামালপুর
জিল বাংলা চিনিকল , উপজেলা- দেওয়ানগঞ্জ, জেলা- জামালপুর


৮টি মন্তব্য:

  1. জামালপুর জেলা নিয়ে এমন একটা তথ্য সমৃদ্ধ উপস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন
  2. ধন্যবাদ , ব্লগটি আপডেট রাখুন ।

    উত্তরমুছুন
  3. MD Rubel mia c/o Abdur Rahman ,carsi shek para ,pavoi bazar jamalpur sadar, jamalpur একটি ডাইভিং লাইচেন পাওয়া গেছে নং, DK0360075L00003

    উত্তরমুছুন